করোনাভাইরাসে কীভাবে মৃত্যু হয়?

করোনা ডেথ
একজন ইতালিয়ান ডাক্তার লিখেছেন:
আমাদের দেশে এখন ঘটে চলছে ভয়াবহ এক ট্রাজেডি। বৃদ্ধ রোগীরা মারা যাবার আগে চোখের পানি ফেলছেন। কাছের মানুষদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ার সৌভাগ্যও তাদের নেই। তারা একা একা মরতে চাননি। কিন্তু তাদের বিদায় জানাতে হচ্ছে ক্যামেরাকে।
তারা সজ্ঞানে, সমস্ত কষ্টকে সহ্য করতে করতে মরে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী ও স্ত্রী একই দিনে মারা যাচ্ছেন। বৃদ্ধ দাদা-দাদী, নানা-নানীর তাদের নাতিদের মুখ শেষবারের মতও দেখতে পাচ্ছেন না।
এই রোগ ফ্লুর চাইতেও ভয়াবহ। বিশ্বাস করুন, ফ্লুর চাইতে অনেক ভিন্ন রকমের অসুখ এটি। এই রোগকে দয়া করে তাই ফ্লু বলবেন না।
জ্বর অসম্ভব বেশি। রোগীর দম এমনভাবে বন্ধ হয়ে আসতে চায় যেন সে ডুবে যাচ্ছে। রোগীরা হাসপাতালে আসতে চায় না। শুধু একটু অক্সিজেন পাবার জন্য তারা বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
এই রোগের বিরুদ্ধে খুব সামান্য কিছু ওষুধ কাজ করে। আমরা সাহায্য করার সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু সবকিছুই নির্ভর করছে রোগীর অবস্থার উপর। বৃদ্ধ রোগীরা এই রোগের সঙ্গে যুদ্ধে পেরে উঠছেন না। আমরা কাঁদছি। আমাদের নার্সরা কাঁদছে। সবাইকে বাঁচিয়ে তুলবার সামর্থ্য আমাদের নেই।
চোখের সামনে মেশিনে তাদের জীবন থেমে যেতে দেখছি প্রতিদিন। প্রচুর রোগী আসছে। অতি দ্রুত আমাদের আরও বেড প্রয়োজন হবে। সবার একই সমস্যা। সাধারণ নিউমোনিয়া। প্রচণ্ড শক্তিশালী নিউমোনিয়া।
আমাকে বলুন কোন ফ্লু এই ট্রাজেডির জন্ম দেয় ?
এটা অত্যন্ত সংক্রামক। এই ভাইরাসটি একেবারেই অন্যরকম।
কোনো কোনো মানুষের জন্য ভয়ংকর। আমাদের দেশে ৬৫ উর্ধ্ব মানুষের প্রায় প্রত্যেকের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিংবা কোনো না কোনো রোগ রয়েছে। কোনো কোনো তরুণদের জন্যও এই রোগ ভয়ংকর।
এইসব তরুণ রোগীদের দেখলে কোন তরুণই নিজেকে নিয়ে নিশ্চিন্ত বোধ করতে পারবে না। আমাদের হাসপাতালে কোনো সার্জারি আর হচ্ছে না। বাচ্চাদের জন্ম, চোখের অপারেশন, কিংবা ত্বকের চিকিৎসা। সার্জারি রুমগুলো ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রূপান্তর করা হয়েছে।
সবাই যুদ্ধ করছি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে। প্রতি ঘন্টায় রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। ক্রমাগত হাতে আসছে টেস্ট রেজাল্ট। সব পজিটিভ। পজিটিভ। পজিটিভ!
সব রোগীর একরকমের কমপ্লেইন: অসম্ভব জ্বর।
শ্বাসকষ্ট।
কাশি।
ডুবে যাবার মত দমবন্ধ অনুভূতি।
প্রায় সবাই ইনটেনসিভ কেয়ারে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কেউ কেউ অক্সিজেন মাস্কের নিচেও শ্বাস নিতে পারছেন না। অক্সিজেন মেশিন এখন সোনার চাইতেও দামি। বিশ্বাস করতে পারছি না, কি দ্রুত এসব ঘটে গেল! আমরা সবাই ক্লান্ত।
কিন্তু কেউ থামতে চাইছি না। সবাই মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করে চলছি। ডাক্তাররা নার্সদের মত অবিরাম কাজ করে চলছেন। দুই সপ্তাহ ধরে আমি বাসায় যাই না। আমার পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের জন্য আমি শংকিত।
সন্তানদের সঙ্গে ক্যামেরা ব্যবহার করে কথা বলছি। মাঝে মাঝে আমি স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদি। আমাদের কারো কোনো দোষ নেই।
যারা আমাদের বলেছিল এই রোগটি তেমন ভয়ংকর নয়, সমস্ত দোষ তাদের। তারা বলেছিল এটি সাধারণ এক ধরনের ফ্লু। কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর এখন অনেক বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে।
দয়া করে ঘরের বাইরে বের হবেন না। আমাদের কথা শুনুন। শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি কারণ ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। সাধারণ মাস্ক ব্যবহার করুন। প্রফেশনাল মাস্কগুলো আমাদের ব্যবহার করতে দিন। মাস্কের অভাবে আমাদের স্বাস্থ্যও ঝুঁকির মুখে। কোনো কোনো ডাক্তার এখন আক্রান্ত।
তাদের পরিবারের অনেকেই জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাই নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করুন। বয়স্ক পরিবার পরিজনকে ঘরে থেকে বের হতে দেবেন না।
আমাদের পেশার কারণে আমরা ঘরে থাকতে পারছি না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা আমাদের রোগীদের বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা নিজেদের শরীরে অসুখ ও ভগ্ন হৃদয় নিয়ে ঘরে ফিরছি। যাদের বাঁচাতে পারছি না তাদের শরীরের কষ্ট কমানোর চেষ্টা করছি। কাল সব ঠিক হয়ে গেলে আমাদের কথা সবাই ভুলে যাবে। আমরা ডাক্তারদের এইটাই পেশা। তাই মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এই রোগ আপনাকে না ছুঁলেও সাবধানে থাকুন। জনসমাগম থেকে দূরে থাকুন। সিনেমায় যাবেন না, মিউজিয়ামে যাবেন না, খেলার মাঠে যাবেন না।
দয়া করে বৃদ্ধ মানুষগুলোর দুঃখ অনুভব করার চেষ্টা করুন। তাদের জীবন আপনাদের হাতে। এবং আপনারা আমাদের চাইতে বেশি মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম। আপনিই তাদের রক্ষা করতে পারেন।
লেখাটি শেয়ার করুন। শেয়ার করুন যেন সমস্ত ইতালি এই চিঠিটি পড়তে পারে। সমস্ত কিছু শেষ হবার আগেই যেন পড়তে পারে।
লেখক: ড. ড্যানিয়েল ম্যাককিনি, গাভাটেসনি হাসপাতাল, ইতালি

মিরজাদি সেব্রিনা
স্বাস্থ

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ৬, নতুন করে আক্রান্ত ৯৪

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৬ জন মারা গেছেন। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ জন। আজ শুক্রবার দুপুরে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। ৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছে ৪২৪ জন। মোট মারা গেছেন ২৭ জন। এর […]

Read More
আজ বুধবার দুপুরে
জাতীয় স্বাস্থ

২৪ ঘণ্টায় ৫৪ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত আরো ৩ জন

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৪ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছে আরও ৩ জন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ২১৮। এবং মারা গিয়েছে ২০ জন। মীরজাদী সেব্রিনা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৮১ টি পরীক্ষা করা হয়। শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৯ জনই ঢাকা শহরের। একজন ঢাকার একটি […]

Read More
করোনা ভাইরাস
আন্তর্জাতিক

মাস্কে ৭ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে করোনা ভাইরাস

করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে আমরা একের পর এক পন্থা অবলম্বন করে যাচ্ছি। সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, গ্লভসের ব্যবহার এমনকি অনেকেকে ডাক্তার না হয়েও পিপিই পরে ঘুড়তে দেখা যায়। এছাড়াও সবাই এখন মাস্ক ব্যবহার করছে। মাস্ককে আপাতত সবাই নিরাপদ মনে করছে। কিন্তু হংকং এর একটি বিজ্ঞানী গবেষনায় উঠে এলো ভিন্ন চিত্র। তারা বলছে মাস্কে সাতদিন পর্যন্ত […]

Read More