
কোয়েলের ডিম বেশ সুস্বাদু। কোয়েলের ডিমের পুষ্টিমান বেশি। পৃথিবীতে যত প্রকার খাদ্য উপযোগী ডিম আছে তার মধ্যে কোয়েল পাখির ডিম গুণে মানে এবং পুষ্টিতে সর্বশ্রেষ্ঠ। কারণ, অন্যান্য ডিমের তুলায় কোয়েলের ডিম প্রোটিন, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন- এ, বি-১, বি-২ এর পরিমাণ তুলনামুলকভাবে বেশি।
একটি কোয়েলের ডিমে যে পরিমান পুষ্টি উপাদান থাকে-
- ক্যালরিঃ ১৪
- ফ্যাটঃ ১ গ্রাম
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডঃ ৪ মিলিগ্রাম
- ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিডঃ ৮৪ মিলিগ্রাম
- প্রোটিনঃ ১.২ গ্রাম
- কোলেস্টেরলঃ ৭৬ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন ও মিনারেল
- ভিটামিন এঃ ১%
- রিবোফ্লাভিনঃ ৪%
- ভিটামিন বি১২ঃ ২%
- প্যানথোনিক এসিডঃ ২%
- আয়রনঃ ২%
- সেলেনিয়ামঃ ৪%
- ফসসরাসঃ ২%
কোয়েল পাখির ডিমের স্বাস্থ্য গুনাগুণ:
১. দেহের শক্তি বাড়ায়-
কোয়েলের ডিম প্রোটিন ও আয়রনে সমৃদ্ধ, যা শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়িয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিমে পাওয়া যায় লাইসিন নামক অ্যামিনো এসিড, যা শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরিতে এবং হরমোন, কোলাজেন ও এনজাইম উৎপাদনে ভূমিকা রাখে।
২। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে-
কোয়েলের ডিমে পাওয়া খণিজ উপাদানগুলোর মধ্যে একটি হলো সেলেনিয়াম। এই খণিজ দ্রব্যটি প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে।
৩। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়-
উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘এ’-ভরপুর কোয়েলের ডিমে। ভিটামিন “এ” দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চোখের পেশির যত্নে কাজ করে থাকে। চোখে সহজে ছানি পড়তে দেয় না।
৪। যকৃত, ত্বক, চুল ও চোখের সুরক্ষা দেয়-
রিবোফ্লাভিন, যা মূলত ভিটামিন বি ২ নামে পরিচিত, দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তিক প্রক্রিয়ার জন্য খুবই দরকারী। কোয়েলের ডিমে আকারের অনুপাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্লাভিন, একের অধিক কোয়েলের ডিম নিয়মিত খেলে তা আমাদের লিভার, ত্বক, চুল, চোখের সুস্থতার জন্য যথেষ্ট।
৫। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে-
কোয়েলের ডিমে পটাসিয়ামের উপস্থিতি বিদ্যমান। পটাসিয়াম দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৬। মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত করে-
আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন বি১২, থাইমিন (ভিটামিন বি১) ও ভিটামিন বি২ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কোয়েলের ডিমে এসকল উপাদান বিদ্যমান।
যা মস্তিস্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
৭। কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করে-
যথেস্ট পরিমাণ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে কোয়েল পাখির ডিমে। বাজে কোলেস্টেরলের কার্যকারিতা রুখতে দরকার হয় উপকারী কোলেস্টেরল।
এ পাখির ডিমের ফ্যাটের ৬০ শতাংশই উপকারী কোলেস্টরল রক্ষায় ব্যয় হয়। ফলে দেহে কোলেস্টরলের ভারসাম্য রক্ষা হয়।
৮। দেহ পরিষ্কার করে-
প্রতিনিয়ত আমাদের দেহে পরিবেশের অনেক ক্ষতিকর উপাদান প্রবেশ করছে। কিডনী ও মূত্রথলিতে পাথর হচ্ছে। যা আমাদের দেহের কার্যক্ষমতা নস্ট করে দিচ্ছে।
কোয়েলের ডিম আমাদের রক্তপ্রবাহ থেকে এসব ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেহকে পরিস্কার রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।